Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the all-in-one-wp-security-and-firewall domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /var/www/wp-includes/functions.php on line 6114
রসনায় দৃষ্টিভ্রম | The Diniverse

রসনায় দৃষ্টিভ্রম

by | জানু. 19, 2023 | Uncategorized

Traditional Khichuri hobe

Paneer and Tofu; both look alike

আপনি কি তাদের মধ্যে একজন যারা কিছু খাবারের মধ্যে পার্থক্য করতে পানের না, কারণ সে খাবারগুলো দেখতে একরকম হলেও আসলে এক নয়। ঠিক যেমন নুডলস এবং স্প্যাগেটি বা কাপকেক এবং মাফিন। তাহলে নিজেকে অদ্ভুত ভাবার কিছু নেই, এমনটা অনেকের সাথেই হয়। এই খাবারগুলো দেখতে একই রকম, তাদের উপাদান সমূহও একই কিন্তু স্বাদ, প্রস্তুত প্রণালী আবার কখনও কখনও পুষ্টিগুণও সম্পূর্ণ ভিন্ন হয়ে থাকে। এই ধরনের দেখতে একই রকম খাবারের তালিকা আছে অনেক। আমাদের এবারের অয়োজনে আমরা পাঁচটি খাবারের মধ্যে পার্থক্য দেখানোর চেষ্টা করব। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক।

১. স্প্যাগেটি এবং নুডলস:

স্প্যাগেটি এবং নুডলস বিশ্বের খুব জনপ্রিয় খাবার। স্প্যাগেটির উৎপত্তি ইতালিতে তবে এটি আমেরিকার একটি খুব সাধারণ এবং সুপরিচিত খাবার। নুডলসের উৎপত্তি চীনে এবং এটি সারা বিশ্বের মানুষের কাছে একটি সাধারণ খাবার। স্প্যাগেটি এবং নুডলস উভয়ই লম্বা এবং নলাকার আকৃতির। তবে নুডলস স্প্যাগেটির চেয়ে পাতলা হয়ে থাকে। সাধারণত নুডুলস চপস্টিক দিয়ে খাওয়া হয় এবং স্প্যাগেটি খেতে ব্যবহৃত হয় কাঁটাচামচ। স্প্যাগেটির প্রধান উপাদান হল গমের আটা এবং উ”চ মানের স্প্যাগেটি তৈরি করা হয় ডুরম (হার্ড) গম দিয়ে। নুডুলসে বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকতে পারে যেমন- চালের আটা, গমের আটা, আলুর স্টার্চ এবং আরও অনেক কিছু। প্রস্তুতপ্রণালীর শুরুতে স্প্যাগেটি এবং নুডলস উভয়ই পানিতে সিদ্ধ করা হয়। পানিতে সামান্য অলিভ অয়েল (জলপাই তেল), লবণ দিয়ে সিদ্ধ করলে এগুলো বেশ ঝরঝরে থাকে। সিদ্ধর পর স্প্যাগেটি বিভিন্ন ধরণের মশলা এবং সস দিয়ে ড্রেসিং করা হয়। আর নুডুলসের ক্ষেত্রে সবজি, মাংস, মুরগি বা ডিম দিয়ে রান্না করা হয়। যদিও তাদের চেহারা একই কিন্তু উভয় খাবারের স্বাদ আপনাকে তাদের আলাদা করতে সাহায্য করে।

২. টোফু এবং পনির:

অনেকেই সবজির তরকারি বা যেকোন ধরনের সালাদের সাথে টোফু এবং পনির খান। দেখতে উভয়ই সাদা, নরম এবং বেশ মৃদু হয়ে থাকে। পুষ্টির ক্ষেত্রে বলতে হয় এই খাবারগুলো একই রকম পুষ্টি সরবরাগ করে থাকলেও পরিমাণে তা ভিন্ন হয়। পনির হল এক ধরনের খাবার যা পশুর দুধ থেকে প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু টোফু তৈরি হয় সয়া থেকে এবং এতে প্রাণীজ কোন উপাদান থাকে না। যে কারণে, পনির দিয়ে তৈরী করা হয় এমন অনেক খাবারে ভেগান রেসিপিতে টোফুর ব্যবহার দেখা যায়। উপমহাদেশে পনিরের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি ভারতে এবং এগুলো ভারতীয় পনির নামেও পরিচিত। ফ্রান্সসহ ইউরোপের অনেক দেশ ও অমেরিকাতে পনিরের যথেষ্ট ব্যবহার রয়েছে। পনিরের মান নির্ভর করে পনিরটি কতক্ষণ পানি ঝরানো হবে তার উপর। এরকম অনেক বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে পনির নরম, ফাঁপা এবং কিছুটা শক্ত হয়ে থাকে। এছাড়া পনিরের মানের ওপর নির্ভর করে রান্না করার সময় তা গলে যাবে কি না। টোফুর উৎপত্তি চীনে এবং আজকাল এটি এশিয়ার দেশগুলোতে খুবই জনপ্রিয়। টোফুকে স্যুপ এবং মচমচে খাবারের সাথে যোগ মিশিয়ে খাওয়া হয়। সয়া নাগেট যাদের অনেক পছন্দ টোফু তাদের ভালো লাগবেই। উভয় খাবারই ক্যালসিয়ামের সমৃদ্ধ উৎস। এতে রয়েছে খনিজ যা হাড়ের স্বাস্থ্যকে বৃদ্ধি করে। কিন্তু টোফুতে পনিরের চেয়ে বেশি ক্যালসিয়াম থাকে।

৩. কাপকেক এবং মাফিন:

এটা কি কাপকেক নাকি মাফিন? যখনই কেউ কাপকেক বা মাফিন দেখে তখনই এই বিভ্রান্তি সবার মনে চলে আসে। মানুষ প্রায়শই এই দুটির মধ্যে পার্থক্য দেখে হতবাক হয়ে ওঠে। অন্যান্য মিষ্টান্নগুলোর মতো, এই দুটো খাবারে ডিম, ময়দা এবং দুধের মতো কিছু অনুরূপ উপাদান রয়েছে। কাপকেক তৈরিতে মাখন ব্যবহার করা হয় এবং এতে চিনির পরিমাণ অনেক বেশি। কাপকেক আকারেও ছোট হয়ে থাকে। মাফিনে কাপকেকের তুলনায় চিনির পরিমাণ কম থাকে। মাফিন তৈরিতে ওট ময়দা, সয়াবিন তেল বা অন্যান্য স্বাস্থ্যকর যেকোনো তেল বা বিকল্প ব্যবহার করা হয়। মাফিনকে সুস্বাদু করতে শুকনো ফল এবং বাদামের মতো উপাদান যোগ করা হয় যাতে এটি আকর্ষণীয় হওয়ার পাশাপাশি পুষ্টিতেও হয় ভরপুর। মাফিনের ধরণ সাধারণত কাপকেকের চেয়ে অনেক বেশি শুষ্ক এবং সামান্য ঘন হয়। এই দুটি খাবারের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল, কাপকেকে ফ্রস্টিং থাকে এবং মাফিনে কোনও ফ্রস্টিং থাকে না।

৪. প্যানকেক এবং ক্রেপস:

প্যানকেক এবং ক্রেপস বিশ্বজুড়ে দুটি সর্বাধিক সাধারণ এবং মজাদার খাবার। দুটি খাবার প্রস্ততের ক্ষেত্রেই ময়দার ব্যাটার ব্যবহার করা হয়। এই ব্যাটারে উপাদান হিসেবে থাকে ময়দা, দুধ, ডিমসহ চিনি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য। ব্যাটারটি প্রস্তুত হয়ে গেলে যেকোন ভাজার পাত্রে, স্কিলেট বা প্যানের ওপর ঢেলে নির্দিষ্ট একটা শেপে এটাকে প্রস্তুত করা হয়। কিছু সময় পর উল্টানো বা রোল করার মাধ্যমে সঠিক তাপে প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত এটি তৈরীর প্রকৃয়া চলে। এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপি অনেক ধরনের প্যানকেকের প্রচলন রয়েছে। এদের মধ্যে কিছু তুলতুলে এবং কিছু চ্যাপ্টা কিন্তু সুস্বাদু হয়ে থাকে। অপর ক্ষেত্রে ক্রেপ হয়ে থাকে ওয়েফার এর মত এবং পাতলা। এই দুটি খাবারই বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকমভাবে তৈরি করা হয় কারণ প্রস্তুতপ্রণালীর ওপর নির্ভর করে এদের রয়েছে অনেকগুলো রূপ। কিছু দেশে, মানুষ এগুলোকে সুস্বাদু বা মিষ্টি হিসাবে খায়। কিছু মানুষ খায় ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ বা ডিনারের আইটেম হিসাবে। প্যানকেক ম্যাপেল সিরাপের সাথে বা ব্লুবেরি ও ব্লুবেরি সস দিয়েও খাওয়া হয়। প্যানকেক খাওয়ার সময় এর সাথে আরও অনেক কিছু যোগ করা হয়, যেমন- কলা, চকোলেট চিপস, হুইপড ক্রিম এবং আইসক্রিম। ক্রেপস খাবারটি একটি পুস্টিসম্পন্ন খাবার যার সাথে ফল এবং নাটেলা থেকে শুরু করে মুরগির মাংস এবং অ্যাসপারাগাস পর্যন্ত যোগ করা যেতে পারে, যা সকালের নাস্তা এবং মধ্যাহ্নভোজনের কিংবা যেকোনো সময়ের মধ্যে খাওয়ার জন্য উপযুক্ত একটি খাবার।

৫. ডোনাটস এবং বেগল:

ডোনাটস এবং ব্যাগেল এই দুটি খাবারকে একই রকম দেখায় কারণ এদের মধ্যে একই জায়গায় আছে একটি গর্ত। কিন্তু এগুলো তৈরির ধরণ ও রেসিপির পাশাপাশি টপিং-এর ক্ষেত্রে একে অপরের থেকে অনেক আলাদা। উভয় খাবারই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়। উভয় খাবারই আকৃতিতে লক্ষণীয়ভাবে একই রকম। ব্যাগেল তৈরীতে যে ময়দা ব্যবহার করা হয় তা খুব বেশি আঠালো ও শক্ত হয়ে থাকে। অন্যদিকে, ডোনাট সকল খাদ্যপ্রেমীদের জন্য বিশেষ এক খাবার। যাদের মিষ্টি খুব বেশী পছন্দ তাদের মধ্যে এটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। তুলনামূলকভাবে হালকা ময়দা দিয়ে ডোনাট তৈরি করা হয়। বেগলের ওপরে তিল, পোস্ত, রসুন ইত্যাদি দিয়ে দেওয়া হয়। শুধু কি তাই, উপরে নরম ক্রিম পনিরের একটি স্তর দিয়েও এটা তৈরি করা হয়। যখন বিভিন্ন ধরণের টপিংস একত্রিত করা হয়, তখন অনেক জনপ্রিয় ব্যাগেল ফ্লেভার যেমন চেডার পনির, দারুচিনি, কিশমিশ, ব্লুবেরি, পেঁয়াজ ইত্যাদি এর সাথে যুক্ত করা হয়। অন্যদিকে, ডোনাট সাধাণত জেলি বা ক্রিম দিয়ে ভরা থাকে। এর ওপরে কিছু মিষ্টি উপাদান দিয়ে চকচকে করা হয়। কিছু ডোনাটে ফ্রস্টিং থাকে আর ওপরে ছিটিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন স্বাদের চকচকে করার মত উপাদান যেমন- চকোলেট, ব্লুবেরি, লেবু, ম্যাপেল ইত্যাদি। 

এখন পর্যন্ত যে পাঁচটি খাবার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো দেখতে একই রকম হলেও স্বাদে একেবারেই আলাদা। এই খাবারের প্রস্তুতি থেকে পরিবেশন পর্যন্ত প্রতিটি বৈশিষ্ট আলাদাভাবে পরিমাপ করা হয়। এতে এটাই নিশ্চিত করে বলা যায় যে বিভিন্ন খাবারের ভিন্ন স্বাদ হয়, তৈরির পদ্ধতিও ভিন্ন হয়। আর এই ভিন্নতার কারণেই বিশ্বব্যাপি এই খাবারগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করে চলেছে।

Related Post
Subscribe To Our Newsletter

Subscribe To Our Newsletter

Join our mailing list to receive the latest news and updates from our team.

You have Successfully Subscribed!