কুলফিঃ ঠান্ডার রাজা

by | জানু. 17, 2023 | Sweet Tooth, Trending News

Traditional Khichuri hobe

১৬শ শতাব্দি থেকে ভারতীয় উপমহাদেশে এক ধরনের হিমায়িত মিষ্টান্ন ছিল যা কুলফি নামে পরিচিত। অনেকের ধারণা কুলফির আবিষ্কার ষোল শতকের মুঘল সম্রাজ্যের সময়ে হয়েছিল। কুলফিকে অনেকে ভারতীয় আইসক্রিম বলে থাকে। ভারতের বিশেষ মিষ্টান্ন হিসেবে এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রেস্তোরাঁয় পরিবেশন করা হয়। কুলফি দেখতে এবং স্বাদে অনেকটা আইসক্রিমের মত হলেও এটা আইসক্রিমের তুলনায় কিছুটা বেশি ক্রিমি এবং ঘন হয়ে থাকে। যদিও বিভিন্ন রকমের কুলফি এখন বাজারে পাওয়া যায় তবু বলে রাখা ভালো কুলফি কিš‘ কোন সাধারন আইসক্রিমের মত নয়, এটি একটি কঠিন হিমায়িত সুস্বাদু এক ধরনের ঘন দুধের কাস্টার্ডের মত। কুলফি এতটাই ঘন হয় যে সাধারণত এটি গলতে অন্যান্য আইসক্রিমের তুলনায় অনেক বেশি সময় নেয়।

বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার কুলফি মালাই খুবই বিখ্যাত এবং সুস্বাদু। দেখা যায় যে, এই বিখ্যাত মালাই কুলফি কলাপাতায় মুড়ে খুব সুন্দর করে পরিবেশন করা হয় যেন এটাই এর আভিজাত্য। আগে মানুষ এই বিখ্যাত কুলফি খাওয়ার জন্য বহুদূর পাড়ি দিয়ে কুষ্টিয়ায় যেত, কিন্ত এখন অনেকেই চেষ্টা করছে কুষ্টিয়ার সেই আসল স্বাদ ধরে রেখে মানুষের মাঝে সেই বিখ্যাত কুলফির স্বাদ পৌঁছে দিতে। যদিও আসল জিনিসের মূল্যায়ন আর কোন কিছু দিয়েই করা যায় না, তারপরও এই চেষ্টার মাধ্যমে মানুষ অন্তত চিরাচরিত সেই মধুর স্বাদ কিছুটা হলেও আস্বাদন করতে পারছে। শুধু কুষ্টিয়ার মানুষই নয় এর ব্যাপ্তি অনলাইনের কল্যাণে এখন দেশব্যাপি।

তবে সব ধরনের মানুষই কুলফি খেতে ভীষণ পছন্দ করে থাকে এবং অনেকে তা বাড়িতে বানানোর চেষ্টা করে। এই ঐতিহ্যবাহী কুলফি বানানোর জন্য প্রথমে দুধকে খুব ভালোভাবে গরম করে নিতে হবে। খুব তাড়াতাড়ি দুধের ঘনত্ব বাড়ানোর জন্য আমরা ব্রেডক্রামস, স্লাইস বা কনফ্লাওয়ার যোগ করতে পারি। এর পরে কুলফি তৈরির জন্য একটি কুলফি ছাঁচ নেওয়া হয়। যদি কুলফির ছাঁচ না থাকে তাহলে কাচের ছাঁচ বা ছোট কাপ ব্যবহার করতে পারি। কুলফি খুব ঘন হওয়া সত্বেও তা ফ্রিজ থেকে বের করলে খুব তাড়াতাড়ি গলে যায়। তাই যত দ্রুত সম্ভব পরিবেশনের আগে তা ছাঁচ থেকে বের করে নিতে হবে।

আমরা জানি মিষ্টান্ন শক্তির একটি বড় উৎস। কুলফিতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালরি ও চর্বি যা তৎক্ষণাৎ শরীরে শক্তি জোগায়। যেহেতু প্রতি আধাকাপ কুলফিতে প্রায় ১৫ গ্রাম চিনি থাকে অর্থাৎ, যেকোন দুগ্ধজাত খাবারের মত এতেও রয়েছে সেসব গুণাগুণ। তাই ওজন বৃদ্ধি সংক্রান্ত খাদ্যতালিকায় পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী এটি হতে পারে অন্যতম একটি নিয়ামক।

অনুমান করা হয় যে আধাকাপ কুলফিতে আধাকাপ দুধের চেয়েও দ্বিগুণ শক্তি থাকে। এছাড়াও কুলফির দুটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান রয়েছে, তা হলো ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। এই দুটি উপাদানই শক্তিশালী এবং সুস্থ হাড় গঠনে সহায়তা করে থাকে। এর দুগ্ধ এবং ল্যাকটোজ উপাদানের কারণে কিছু মানুষের জন্য কুলফি খুবই ক্ষতিকারক হতে পারে। সাধারণত যারা ল্যাকটোজ হজম করতে পারে না তাদের জন্য এসব খাবার সহজ হয় না। পাবমেড হেলথ অনুযায়ী প্রায় ৩০ মিলিয়ন আমেরিকানরা ল্যাকটোজ হজম করতে পারে না। এরকম মানুষদের জন্য সয়া দুধ বা বিকল্প কিছু দিয়ে আইসক্রিম তৈরি করা যেতে পারে।

Related Post
ফিফার জ্বর

ফিফার জ্বর

‘ফুটবল শুধু একটি খেলা নয়, এটি একটি আবেগ’- কথাটি প্রতিটি বিশ্বকাপেই সত্যি হয়। ‘ফুটবল’...

Subscribe To Our Newsletter

Subscribe To Our Newsletter

Join our mailing list to receive the latest news and updates from our team.

You have Successfully Subscribed!