জায়ফল সেই অতিসাধারণ মনে হলেও বেশ প্রয়োজনীয় সেই উপাদানগুলির মধ্যে একটি যা সারা বিশ্বের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে দেখা যায় তবে বিশেষভাবে এশিয়া মহাদেশের দেশগুলোর রান্নাঘরে এটির উপস্থিতি খুবই উল্লেখযোগ্য। এটি একটি বহুমুখী মশলা যা সুস্বাদু ঝাল-মিষ্টি খাবারের পাশাপাশি কিছু পানীয়তেও ব্যবহৃত হয়। যে খাবারেই এটি ব্যবহার করা হয় তার শুধু স্বাদই বাড়ায় না বরং এতে বেশ কিছু স্বাস্থ্য সুবিধা থাকায় এটি আমাদেরকে সুষম খাদ্যের দ্বারা সুস্থ জীবনযাপনে সাহায্য করতে পারে। যে রান্নাবান্নায় আগ্রহী না বা তার সাথে পরিচিত না তাদের কাছে প্রথম দেখায় জায়ফলকে একটি ছোট পাথরের মতো মনে হতে পারে এবং এটি খুবই আশ্চর্যজনক বিষয় যে কীভাবে এই এতো ছোট একটি উপাদান খাবারের স্বাদ সম্পূর্ণরূপে বদলে দিতে পারে, যা একে আরো মুখরোচক করে তোলে।
জায়ফলের ইতিহাস
আমরা যদি জায়ফলের ইতিহাসের দিকে তাকাই,তবে দেখা যাবে যে, এর সবচেয়ে আদিম প্রমাণ হল যে এটি জায়ফল গাছের বীজ ওরফে মিরিস্টিকা সুগন্ধি থেকে আসে যেটি কিনা ইন্দনেশিয়ার বান্দা দ্বীপপুঞ্জের দেশীয় চিরসবুজ গাছগুলির মধ্যে একটি এবং যা একসাথে দুটি মশলা যথাক্রমে জায়ফল এবং গদার আবাসস্থল। যদিও গদা বলতে আমরা বাইরের লাল জালের ন্যায়ে পদার্থটিকে বুঝি আর জায়ফল বলতে ভিতরের বীজটিকে বুঝি, যার অর্থ হল জায়ফল এবং গদা একইসাথে পাওয়া যেতে পারে। জায়ফল গুরা মশলা হিসাবে অনেক বেশি ব্যবহার করা হয় তবে গদা তুলনামূলকভাবে খুব কম ব্যবহার হয়।
জায়ফলের ব্যবহারসমূহ
সেই আদিকাল থেকেই মানুষ নানাভাবে জায়ফল ব্যবহার করে আসছে। ঝাল এবং মিষ্টি খাবারে ব্যবহারের করার পাশাপাশি এটি একটি ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসাবেও ব্যবহৃত হত। অষ্টাদশ শতাব্দীতে,ফ্যাশন সচেতন নারী ও পুরুষেরা সেইসাথে অন্যান্যরাও যারা ফ্যাশন সম্পর্কে পরোয়া করত না,তারাও ছোট রূপালী বাক্সে জায়ফল নিয়ে যেত ঘুরে বেরাত যা তাদের পকেটে ফিট হোতো এবং তারা যখন খুশি তা সেবন করতে পারতো।
জায়ফলের কার্যকারিতা
জায়ফল আকারে বেশ নগণ্য মনে হলেও সেই জায়ফল থেকে যে বীজ পাওয়া যায় তাতে অনেক উদ্ভিদ যৌগ থাকে যা আমাদের শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। জায়ফল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদানে সমৃদ্ধ যা দেহের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে যা হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগ থেকে নিরাপদে থাকতে সহায়তা করে। জায়ফল কামশক্তি বাড়ায়,রক্তে শর্করার উন্নতি ঘটায় এবং এতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যও রয়েছে।