বেশ দীর্ঘ সময় ধরে টুনা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের হৃদয় কেড়ে নিয়েছে সবচেয়ে জনপ্রিয় লবণাক্ত পানির মাছ হিসেবে যা ইদানিং তাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি প্রধান সামগ্রী হিসেবে বিবেচিত হয়। এ কারণেই জাতিসংঘের ঘোষণার পর এই প্রজাতির মাছের গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে ২রা মে দিনটিকে সারা বিশ্বে “বিশ্ব টুনা দিবস” হিসেবে পালন করা হয়।
টুনা সামুদ্রিক মাছের থুননিনি গোত্র থেকে এসেছে। টুনা তার সহজলভ্যতার কারণে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। আনুমানিক সাত মিলিয়ন টন টুনা বার্ষিক ভিত্তিতে সংগ্রহ করা হয় এবং সারা বিশ্বের ৯৬ টি দেশে ব্যবহারের জন্য বিতরণ এবং প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এটি বাণিজ্যিকভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান মাছ হিসেবে বিবেচিত হয়। টুনাতে প্রচুর প্রোটিন, খনিজ পদার্থ, ভিটামিন বি১২ এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যেমন ডিএইচএ এবং ইপিএ রয়েছে যা মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে এবং চোখ ও হৃদয়কে সুস্থ রাখে।
এটি একটি চাঞ্চল্যকর খাদ্য উপাদান হিসাবে রাজ করছে যা মানুষের যা মানুষের খাদ্য তালিকার শীর্ষে রয়েছে কারণ এটি কাঁচা, ফ্রোজেন এবং টিনজাত ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় খাওয়া যেতে পারে। একটি রেসিপিতে টুনাকে শুধুমাত্র অন্তর্ভুক্ত করার সহজ উপায়ই নয় বরং তা পরিবেশন করার জন্য আরও অভিনব উপায়ও রয়েছে। এটি একটি বহুমুখী খাদ্য দ্রব্য যা মানুষকে তার তৃপ্তিদায়ক বন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছে। টুনাকে একটি স্যান্ডউইচে বা টুনা সালাদের প্রধান উপাদান হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। অথবা এটি একটি ব্যয়বহুল স্টেক বা সুশির আকারেও পরিবেশন করা যেতে পারে।
থাইল্যান্ডে সর্বোচ্চ পরিমাণে টুনা প্রক্রিয়াজাত করা হয়। তবে এটি বেশিরভাগ জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে জনপ্রিয় কারণ তারা এই আইটেমের শীর্ষ ভোক্তা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, টুনা প্রতিটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট চার্টের একটি অত্যাবশ্যক অংশ, তাই যারা ডায়েট করছেন টুনা সালাদ তাদের জন্য একটি প্রিয় খাবার হয়ে উঠেছে। জাপানে, এটি ব্যাপকভাবে সাশিমি এবং সুশি খাবারের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং যুক্তরাজ্যে টিনজাত টুনা হল সবচেয়ে বেশি ক্রয়কৃত মাছের দ্রব্য। কারণ এটি ব্যাপকভাবে পাওয়া যায় এবং তাও আবার কম খরচে।
টুনা উল্লেখযোগ্যভাবে রন্ধনশিল্পের একটি উল্লেখযোগ্য উপাদান হয়ে উঠেছে।কিন্তু এর বিপুল চাহিদার কারণে সমুদ্রে টুনার পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে এবং এর ফলে অতিরিক্ত মাছ ধরা হচ্ছে। বিদ্যমান টুনা প্রজাতিকে ডিম পাড়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয় না এবং সেই ডিমগুলো বড় হতে পারে না। বিশ্ব টুনা দিবসকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে যেন সকলে এই প্রজাতিগুলি থেকে আমরা যে সমৃদ্ধ পুষ্টি এবং অর্থনৈতিক সুবিধাগুলি পাই তার মুল্য বুঝতে পারি এবং তাদের পুষ্টি ও প্রজননের জন্য যথেষ্ট সময় দিতে পারি।