বিশ্ব চকোলেট দিবস

by | জানু. 19, 2023 | Special Day

Traditional Khichuri hobe

শুভ কাজ থেকে শুরু করে যেকোনো আনন্দ উৎসবে বিশেষত্বের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে চকোলেট। এই বিশেষত্বকে আন্তর্জাতিক সম্মাননা দিতে বিশ্ব চকলেট দিবস পালন করা হয়। ভালোবাসা এবং যতœ প্রকাশেরও একটা প্রতীক চকোলেট। প্রিয়জনদেরও চকলেট দিয়ে বিশেষ অনুভব করানো এখন নতুন কিছু নয়। হিন্দি প্রবাদে আছে -‘‘মানুষের মনের রাস্তা, পেটের রাস্তা দিয়ে পার করে।’’

সুস্বাদু খাবার প্রতিটি মানুষের বিশেষ পছন্দের। সেটা যদি মিষ্টান্ন হয় তবে সে মাত্রা আরো দ্বিগুণ। চকোলেট বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরিতে গুর“ত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। খাবারটি মানুষের মুখে হাসি এনে দিতে বাধ্য। ভালোবাসার মানুষকে সাধ্যের ভেতর চকলেট উপহার দেওয়ার মতো ভালো উপহার আর নেই। চকলেট পছন্দ করে না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর; বাচ্চা থেকে শুরু যেকোনো বয়সের মানুষের পছন্দের তালিকায় এটি নিঃসন্দেহে স্থান তৈরি করে নিয়েছে। চকলেটের প্রভাব স্বাদে যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে স্বাস্থ্য ভূমিকায়। চকলেটের বিদ্যমান সেরোটোনিনের প্রভাবে শরীরের বাড়তি উদ্দীপনা সৃষ্টি হয় যা বিষন্নতা কমাতে সাহায্য করে এবং আমাদের ইন্দ্রিয়ে ভালো লাগার অনুভূতিগুলো সক্রিয় হয়। মানসিক অশান্তিতে ভোগা মানুষ যে পরিমাণে চকলেট খান তারচেয়ে ৫৫ শতাংশ বেশি খেলে এ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। চকলেট শুধু মন তৃপ্ত করে না এটি মস্তিষ্ককে চাপমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। জেনে রাখা জর“রি যে, ডার্ক চকলেট খেলে হৃদরোগের সম্ভাবনা কমে যায় এবং চকলেট মুখের ব্রণ, একজিমা এবং ত্বকের অবাঞ্ছিত দাগ থেকে দূরে রাখে। অত্যধিক আকর্ষণের কারণে চকলেট জনপ্রিয় ফ্লেভার গুলোর মাঝে অন্যতম।

মানুষ প্রতিদিন হার্সের ৮ কোটি চকলেট খায়। সমগ্র পৃথিবীতে উৎপন্ন অ্যালমন্ডের ৪০ শতাংশ চকলেট তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়। ইংরেজি ভাষায় ‘কোকো’ শব্দটি এসেছে স্প্যানিশ ভাষা থেকে। ধারণা করা হয়, স্প্যানিশ ভাষায় এই শব্দটি এসেছে, নাহুয়াতি ভাষা, অর্থাৎ অ্যাজটেকদের ভাষার শব্দ থেকে। প্রধান তিন ধরনের চকলেট রয়েছে। যেগুলো হচ্ছে; ডার্ক চকোলেট, মিল্ক চকলেট এবং সাদা চকলেট।

ভিন্ন ধরনের চকলেটগুলো ভিন্ন স্বাদ দিয়ে থাকে। ধারণা করা হয়, ইউরোপে ১৫৫০ সাল থেকে ৭ জুলাই চকলেট দিবস পালিত হয়ে আসছে। তথাপি, যুক্তরাষ্ট্রে চকলেট দিবস ১০ জানুয়ারি, মিল্ক চকলেট দিবস ২৮ জুলাই এবং সাদা চকলেট দিবস পালিত হয় ২২ সেপ্টেম্বর। উল্লেখযোগ্য ভাবে চকলেট কভারিং দিবস ১৬ ডিসেম্বর। দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন উপত্যকায় চকলেটের জন্ম। এখান থেকেই আবিষ্কার করা হয় বিশেষ উদ্ভিদ কোকো, যার বীজ থেকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তৈরি করা হয় চকোলেট। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এর চাষ শুর“ হয় মধ্য আমেরিকার কয়েকটি দেশে, তারপর এই বীজ পৌঁছায় আফ্রিকায়। এই গতিবিধি সুবাদে চকলেটের গুনাগুন ছড়িয়ে পরে সারা পৃথিবী জুড়ে। নিঃসন্দেহে অর্থনীতিতে চকলেটের ব্যবসা ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। আফ্রিকাকে উদাহরণ স্বরূপ ধরলে, বিশ্বের মোট অন্যান্য মিষ্টান্ন বিক্রি থেকে সিংহভাগ পরিমাণ আয় হয় চকলেট বিক্রি থেকে।

The main types of chocolate

আফ্রিকা আমেরিকা ছাড়াও পৃথিবীর অনেক দেশই চকলেটের জন্য বিখ্যাত। তার মধ্যে, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া উল্লেখযোগ্য ভাবে বিখ্যাত। আধুনিক চকলেটের জনক জোসেফ ফ্রে, ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে ডাচ কোকোর সঙ্গে অপসারিত কোকো মাখন মিশিয়ে প্রথম চকলেট পেস্ট তৈরি করেন। এছাড়া, ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে রিচার্ড ক্যাডবেরি এর অবদান অনস্বীকার্য। ফলস্বরূপ, সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছে যায় চকলেট অতি সহজেই। মজার ব্যাপার এইযে, বছরে এগারো বার ঘুরে ফিরে চলে আসে বিভিন্ন ধরনের চকলেট দিবস উদযাপনের সুযোগ। ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহের চকলেট দিবস মূল আকর্ষন।

  পছন্দসই ফ্লেবার বেছে নিয়ে, ভালোবাসার মানুষ কিংবা পরিবারের যেকোনো সদস্য থেকে শুর“ করে বন্ধুদের চকলেট উপহার দেওয়া নতুন কিছু নয়। আমাদের খাদ্য সংস্কৃতির ইতিহাসে চকলেটের কোনো নমুনা না থাকলেও সবার কাছে এটি সমান হারে জনপ্রিয়। বরং চকলেটের আদান-প্রদান, এটি একটি অকথিত রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাকে বলা যায়, ‘‘মনের রীতি’’। মূলত, এই বিশেষ মিষ্টান্নের গুর“ত্বের উদযাপনে দিবসগুলো পালিত হয় বিশ্বজুড়ে। খাঁটি চকলেটের সাথে গড়ে উঠুক সুখাদ্যাভ্যাস।

Related Post
Subscribe To Our Newsletter

Subscribe To Our Newsletter

Join our mailing list to receive the latest news and updates from our team.

You have Successfully Subscribed!