২০২০ সালের মার্চ থেকে এক মারাত্মক মহামারীর সাথে পৃথিবীর লড়াই চলছে। কোভিড-১৯ নামক এ যুদ্ধে ১১ আগষ্ট ২০২১ পর্যন্ত প্রায় ২০৩৯৪৪১৪৪ কোভিড রোগী সনাক্ত হয়েছে এবং ৪৩১২৯০২ প্রাণ হারিয়েছে। বিশ্বের এ রকম এক বিধ্বংসী পরিস্থিতিতে, এখন সবথেকে বেশি প্রয়োজন সুস্থ জীবনযাপনের অভ্যাস গড়ে তোলা। বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করে বলেছেন শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, সঠিক স্যানিটাইজেশন, স্বাস্থ্যকর খাবার ও ব্যায়ামের মাধ্যমে আমাদের শরীরকে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই করার উপযুক্ত করে তুলতে পারা সম্ভব।
এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের মতে, মাল্টিভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ সবথেকে বেশি প্রয়োজন। বিশেষত, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল রোগীদের এবং অসংক্রমিত ব্যক্তির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
যে সকল ভেষজ, ফলমূল এবং শাকসবজি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে সেগুলো গ্রহণ করার প্রতি ঝুঁকতে হবে। আদা, রসুন, থাইম, অরিগানো, বেদানা, যষ্টিমধু, এল্ডারবেরিসহ আরো কিছু ভেষজ ও গুল্ম রয়েছে যা ইমিউনিটি বাড়াতে ভূমিকা রাখে। ভিটামিন ছাড়াও আমিষ জাতীয় খাবার করোনার সাথে লড়াই করে জীবনরক্ষকারী হিসেবে কাজ করে। ডিম ও মাংস আমিষের বেশ ভালো উৎস। এবং অবশ্যই প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে কারণ সকল উপাদান ও পুষ্টির যথাযথ বিকাশের জন্য শরীরে পানির প্রয়োজন। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিকে প্রতিদিন অন্তত ২ লিটার পানি পান করতে হবে।
ফিটনেস বজায় রাখতে যথাযথ ব্যায়াম প্রয়োজন। আর এমতাবস্থায় ব্যায়াম কেবল ফিটনেসের দিকেই খেয়াল রাখে না, বরং কাজ করে যেকোন রোগের বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে। জগিং, প্রতিদিন হাটা, জিম বা যোগ ব্যায়াম ইত্যাদির মাধ্যমে শরীরকে সুস্থ রাখতে পারাটা হবে এমন অসময়ের উত্তম রুটিন। কারণ নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
সবশেষে বলা যায়, রোগ থাকলে তার প্রতিকারও আছে। তা সময়সাপেক্ষ হতে পারে তবে তা সেটাই শেষ নয়। সুস্থ জীবন ধারা রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি বাড়ায়। সেজন্য আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যা আমরা অনেকেই অবহেলা করে থাকি। বিশ্বাস রাখতে হবে নিজের প্রতি। ‘সুস্থ হয়ে উঠবোই’-এ বিশ্বাসটা সুস্থতার প্রতি অনেকখানি এগিয়ে দিতে পারে। পৃথিবী আবার সুস্থ হবে, মুক্তি পাবে এ মহামারীর গ্রাস থেকে। ঠিক ততক্ষণ পর্যন্ত লড়াই করে যেতে হবে আমাদেরকে সঠিক নিয়মের মধ্যে থেকে। আমরা পারবোই কারণ, মানবজাতি এত সহজে হার মানবে না।