স্বাস্থ্য সচেতনতা শুরুই হয় দৈনিক প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রম আর পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে যার আশি ভাগ খাদ্য অভ্যাস আর কুড়ি ভাগ শরীরচর্চার উপর নির্ভর করে। যেহেতু খাবারটা অতি গুরুত্বপূর্ণ, তাই সবচেয়ে উপযুক্ত খাদ্যাভ্যাসটা অনুসরণ করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে অর্গানিক ফুড বা জৈব খাদ্য হচ্ছে অন্যতম। এসব খাবারে কোন রকমের ঔষধ, কিটনাশক, সার বা কেমিক্যাল ব্যাবহার করা হয় না এবং সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক মাধ্যমে উৎপাদন করা হয়। জৈব খাদ্যের প্রচুর গুণ রয়েছে যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে অনেক বড় ভুমিকা পালন করে।
পুষ্টিতে ভরপুর
শরিরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে জৈব খাদ্য। কারণ এতে আছে ভরপুর ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও হার্টের জন্য ভালো আর চোখের জন্যও উপকারী। সাথে জীবনাশঙ্কার মত রোগ যেমন ক্যান্সার ও অন্যান্য অসুস্থতা, প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ
এসব খাবারে দরকারি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা আমাদের হার্টকে ভালো রাখতে সহায়তা করে। এমনি এক ফ্যাটি অ্যাসিড হচ্ছে কনজুগেটেড লিনোলিক অ্যাসিড যা আমাদের কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের সুরক্ষা বজায়ে রাখে। বিশেষ করে জৈব ডেইরি ও মাংসে এই উপাদানগুলো ভরপুর থাকে। ওমেগা-৩ এসিডও এক উপকারী ফ্যাটি এসিড যা জৈব খাদ্যে উপস্থিত, এবং এটিও শরীরের জন্য খুবই ভাল।
অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসটেন্স থেকে সুরক্ষা
সাধারণত যেসব খাবার জৈব না সেগুলোতে বেশি পরিমানে ওষুধ বা ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় বেশি দিন সংরক্ষণ করার জন্য। তাই না চাইতেও আমদের পেটের ভিতরে এগুলোও চলে যায় আমদের প্রতি দিনের খাবারের সাথে। আর এ কারণে আমাদের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসটেন্স তৈরি হয়, যার ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। পক্ষান্তরে, জৈব খাদ্যে কোন কৃত্রিম উপাদান না থাকায় আমরা স্বাস্থ্যকর খাবারটা পাই।
ইমিউনিটি বৃদ্ধি
জৈব খাদ্যেতে কোন ধরনের পরিবর্তন আনা হয় না এবং জিনগতভাবে পরিবর্তিতও হয় না। খাদ্য পরিবর্তন হয় এমন সব পদ্ধতি প্রয়োগ করলে শরীরের প্রচুর ক্ষতি হতে পারে, আর আমাদের ইমিউন সিস্টেমের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই জৈব খাবার হতে পারে আমাদের নিরাপদ বিকল্প যা আমাদের এসব প্রতিকূল অবস্থা থেকে রক্ষা করে আর ইমিউন সিস্টেমকে আরো শক্তিশালী করে তোলে।
স্বাস্থ্যর জন্য নিরাপদ
এছাড়াও কোন রাসায়নিক কীটনাশক বা সার ব্যবহার না করার ফলে খাদ্যের মধ্যে কোনও বিষাক্ত উপাদানের উপস্থিতি থাকে না। এমনকি জীবাণুমুক্ত করার জন্য রেডিয়েশনের ব্যবহারও করা হয় না। তাই জৈব খাবার বড় ধরনের স্বাস্থ্যকর বিকল্প।
সুস্থ থাকাটা অনেক জরুরি একটি সুন্দর জীবন পার করার জন্য। তাছাড়া শরীর ভালো থাকলে মনও ভালো থাকে। তাই শরীর ও মন দুটোই ভালো রাখতে জৈব খাদ্য বেছে নিলে হেরে যাবেন না। আর যেহেতু এতে কোন ক্ষতিকর উপাদান নেই, এ প্রকার খাবারগুলো নির্ভয়ে খেতে পারেন।