একটি বেশ জনপ্রিয় ও সুস্বাদ ফলের নাম হল পেঁপে, বা পাপাও নামেও বলা হয় এই মিষ্টি ফলকে। এই ফলটি আরও অনেক ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। যদিও পেঁপের ফলন গ্রীষ্ম আর শরতের শুরুতে বৃদ্ধি পায় তবে আজকাল সারা বছর ধরে এই ফল জন্মায়। পেঁপে খুব সহজেই বাজারে পাওয়া যায়। কারণ পেঁপে গাছ খুব দ্রুত বেড়ে উঠে আর ৬-১২ মাসের মধ্যেই নতুন ফলের দেখা পাওয়া যায়।
পেঁপে এককালে এক বহিরাগত ফল ছিল যার উৎপত্তি মূলত মেক্সিকো এবং সেন্ট্রাল আমেরিকায় হয়। ফ্লোরিডা এবং ক্যারিবীয়ান অঞ্চলেও এই ফলের চাষ করা হয়। তবে এশিয়ায় প্রথম এই ফলের আগমন ঘটে স্প্যানিশ লোকেদের মাধ্যমে। সময়ের সাথে সাথে, ভারতের বাজারেও এই ফলটি ছড়িয়ে যায়, আর ইউরোপেও এর জনপ্রিয়তা বেড়ে উঠে। ম্যানিলা গ্যালিয়নের মাধ্যমে দ্বীপে দ্বীপে প্রবেশ করার পর, পেঁপে ফিলিপিনো খাবারের একটি বিশেষ অংশ হয়ে ওঠে। ১৮০০ –এর দিকে হাওয়াইতেও এই ফল ঢুকে পরে এবং ১৯ শতকের মধ্যে, বিশ্বের সমস্ত গ্রীষ্মপ্রধান এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলে এই ফলটি উৎপন্ন হতে শুরু করে। বর্তমানকালে পেঁপে একটি অতি সাধারণ ফল যা সব জায়গাতেই দেখতে পাওয়া যায় যা নানা ধরনের খাবারে ব্যবহৃত হয়।
তবে পেঁপে যেই জাতেরই বা আকারেরি হোক না কেন, এ ফল এমনি খাওয়ার পাশাপাশিও আরও নানা পদ্ধতি রয়েছে খাবারের, যেমন সালসা, সালাদ, অথবা স্মুদির সাথে যোগ করে খাওয়া যেতে পারে, আবার সবজি হিসাবে রান্নাও করা যেতে পারে নানা ভাবে। তাছাড়া পেঁপের জুস গরমের সময়ে ভারি মজাই লাগে।
স্বাস্থ্যর জন্য পেঁপের উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। এই ফলের বিশেষ পুষ্টিগুণ রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, ফাইবার সমৃদ্ধ এই ফল আমাদের প্রস্তাবিত দৈনিক ভিটামিনের পরিমাণের প্রায় ৩০০% ভিটামিন সি পুরন করে; অর্থাৎ এতে ভিটামিনেরও কমতি নেই – ভিটামিন এ, সি এবং কে তে ভরপুর। এছাড়াও, পেঁপে ইমিউন সিস্টেমকে সমর্থন করে রোগ প্রতিরোধ খমতা বাড়ায়, তারা এন্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং পেঁপেই এমন এক ফল যার মধ্যে পাপাইন নামক একটি ডাইজেস্টিভ এনজাইম রয়েছে যা প্রোটিন হজম করতে পারে। অনেক সময় ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসায়েও পেঁপে ব্যবহার করা হয়। বলা বাহুল্য পেঁপে শুধু মাত্র সুস্বাদুই নয়, আমাদের শরীরের জন্যও অনেক ভালো।
পরিশেষে একটি মজার তথ্য: সেপ্টেম্বর জাতীয় পেঁপে মাস হিসাবে মানা হয়।