ব্লুবেরি খুব জনপ্রিয় এবং মিষ্টি একটি ফল। এটি দেখতে ছোট এবং নীল বা বেগুনি রং এর। সঠিক মাটি পেলে এটি খুব সহজেই উৎপাদন করা যায় এবং তাজা অবস্থায় খাওয়া যায়। বিংশ শতাব্দীর আগে পর্যন্ত, ব্লুবেরি চাষ হত না বরং শুধু বনজঙ্গলে পাওয়া যেত। কিন্তু বিংশ শতাব্দী থেকে এর বানিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় এবং তখন থেকেই এর উৎপাদনে এক আমূল বিপ্লব আসে।
ব্লুবেরি মূলত উত্তর আমেরিকার একটি ফল। এ ফলটি সারাবছরই পাওয়া যায়। বর্তমানে এটি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, এবং নিউজিল্যান্ডে উৎপাদিত হচ্ছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এই সুস্বাদু ফলের সবচেয়ে বড় উৎপাদক দেশ। ২০১৯ সালে তারা বিশ্বের মোট ব্লুবেরির ৩৮% উৎপাদন করে। বৈশ্বিক উৎপাদনের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে কানাডা।
প্রধানত দুই প্রকারের ব্লুবেরি দেখা যায়:
১. নিচুঝাড়ের বন্য ব্লুবেরি এবং
২. উঁচুঝাড়ের চাষকৃত ব্লুবেরি।
বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত কেবল নিচুঝাড়ের ব্লুবেরি পাওয়া যেত এবং তা বন থেকে সংগ্রহ করতে হত। তবে বিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞানীরা ব্লুবেরি চাষের কলাকৌশল উদ্ভাবনে সক্ষম হন।
এই মিষ্টি এবং রসালো ফলটি সরাসরি খাওয়া যায়। এছাড়া এটি সংরক্ষণ করেও বিক্রি করা হয়। এর বাইরেও, ব্লুবেরি থেকে বানানো জ্যাম, জেলি এবং জুস পাওয়া যায়। ব্লুবেরি-কেন্দ্রিক কিছু কিছু পানীয় এবং রেসিপিও আছে। তবে বলা হয়ে থাকে শুধু কাঁচা ব্লুবেরিতেই সঠিক খাদ্যগুণ বজায় থাকে।
ব্লুবেরি হল “সুপারফুড” হিসেবে খ্যাত একটি খাবার। খুব কম খাবারের ভাগ্যে এমন খেতাব জোটে। তবে এতে উপস্থিত বহুমুখী স্বাস্থ্যগুণের কারণে এটি এই খ্যাতি পাওয়ার যোগ্য। ব্লুবেরিতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এছাড়া এতে আছে গুরুত্বপূর্ণ নানা খাদ্য উপাদান, আঁশ এবং ভিটামিন সি ও কে। কম ক্যালরি কিন্তু উচ্চ খাদ্য উপাদান সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে এই ফল বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এসবের বাইরে, ব্লুবেরি হৃদরোগ এর ঝুঁকি কমায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং মেধাশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। ক্যান্সার, ডায়াবেটিস কিংবা হৃদরোগের মত দীর্ঘমেয়াদি রোগের চিকিৎসায়ও এটির ব্যবহার করা হয়। এতসব গুণের কারণে এই ফলকে প্রাকৃতিক স্বাস্থ্য প্যাকেজ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
শেষ পর্যায়ে এসে একটা ছোট তথ্য জানাতে চাই আপনাদের – ব্লুবেরির এই নীল বা বেগুনি রং এর জন্য দায়ী যে উপাদানটি সেটির নাম হল অ্যান্থোসায়ানিন।