ড্রাগন-ফল গাছটি অনেকটা ক্যাকটাস গাছের মত। এর অসম্ভব সুন্দর রঙিন আবরণ সহজেই যে কাউকে আকৃষ্ট করে। বাইরের আবরণ সাধারণত গাঢ় গোলাপি থেকে গাঢ় লাল বর্ণের হয়ে থাকে। কিছু ড্রাগনের ভেতরটা লাল এবং কোনোটির কিছুটা বিবর্ণ, সাথে থাকে ছোটো ছোটো কালো বীজের সজ্জা। হলুদ বর্ণের এক ধরনের ড্রাগন পাওয়া গেলেও লাল বা সাদা বর্ণের ড্রাগন-ফল অধিক সহজলভ্য।
সামান্য মিষ্টি স্বাদের এই ফলটির টেক্সচার খুবই নরম । স্লাইস করে বা খোসা ছাড়িয়ে কিউব করে যে কোনোভাবেই খাওয়া যায় এই ফলটি। স্মুথি ও সালাদে এর ব্যবহার সব থেকে বেশি। ভিন্নধর্মী গঠনের জন্যই এর নাম হয়েছিলো ড্রাগন ফল। এটি মূলত মধ্য-আমেরিকা, মেক্সিকো, দক্ষিণ-আমেরিকায় বেশি জন্মে। থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কায় সবথেকে জনপ্রিয় ফল ড্রাগন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও এর চাষ করা হয়।
ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনের উৎস এই ফলটিতে আরো নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। ভিটামিন, খনিজ উপাদান, এন্টিঅক্সিডেন্ট সহ আরো অনেক উপাদান রয়েছে যা শরীরের বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে। এসব কারণে একে সুপারফুড বলা হয়।
কোষের ক্ষতিসাধন রোধ করতে এবং বার্ধক্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এন্টিঅক্সিডেন্ট। এর বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর উপাদান ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, কোলেস্টেরল কমায়, বাত ও হাপানি প্রতিরোধ করে। এছাড়াও হার্টের রোগ প্রতিরোধ ও ওজন নিয়ন্ত্রণেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
ড্রাগন-ফলের ত্বক কিছুটা তেতো স্বাদযুক্ত, যার কারণে সাধারণত বাইরের আবরণটিকে মানুষ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে না। কিন্তু কেউ কেউ এই তিক্ততার জন্যই সালাদে ব্যবহার করে উপভোগ করেন। বিগত কয়েক বছরে, বাংলাদেশে এই ফলের জনপ্রিয়তা বেশ বেড়ে গিয়েছে। অনেক উদ্যোক্তা এই খাতে বিনিয়োগ করে বেশ সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। ড্রাগন-ফলের ব্যপক চাহিদা মানুষকে এটি চাষে আরো আগ্রহী করে তুলছে।
আমাদের উচিত ড্রাগন ফলের চাষে, চাষীদের আরো উৎসাহিত করা। এতে করে বিদেশেও এর রপ্তানির মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতিতে বিশাল পরিবর্তন আনা সম্ভব।