খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: বাংলাদেশ অধ্যায়

by | জানু. 5, 2023 | Food Safety & Hygiene

Traditional Khichuri hobe

Checking the quality of food is necessary

বাংলাদেশী খাবারের মান বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিশ্বমানের বলে বিবেচিত হয় না। আমরা অনেকেই, বাংলাদেশে বসবাসরত বা পরিদর্শনকারী, দ্রুত রাস্তার খাবার বিক্রেতাদের দ্বারা প্রস্তুতকৃত সুস্বাদু সমুচা গ্রাস করার পরে পেটে চাপা অনুভূতির সাথে পরিচিত। বাস্তবিকভাবে, বাংলাদেশের খাদ্যের মান পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রণে নেই।

আপনি কি জানেন যে বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি মানুষ প্রতি বছর মানহীন খাবার গ্রহণের ফলে সৃষ্ট অসুস্থতায় ভোগেন?

এ দেশে প্রতি বছর আনুমানিক ৩২৩০০০ অভিবাসির আগমন ঘটছে, এদের মধ্যে কিছু আছে বাংলাদেশী, যারা অভিবাসনের পর পরিবার ও বাচ্চাদের নিয়ে নিজ দেশে সময় কাটাতে আসেন, আবার কিছু আসেন কাজের উদ্দেশ্যে বা আন্তর্জাতিক পর্যটক হিসেবে। এদের মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, তাদের খাদ্যাভ্যাসের সাথে অমিল থাকায় এবং সঠিক খাবারটি নির্বাচনে ত্রুটি থাকায় অনেকেই খাদ্যজনিত রোগে ভোগেন।

খাদ্যজনিত রোগ বাংলাদেশে একটি বড় সমস্যা। সবচেয়ে সাধারণ এবং যুক্তিযুক্তভাবে সবচেয়ে অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর উপসর্গ হল ডায়রিয়া। সুস্বাদু খাবারের পরে যে মানুষটা টয়লেটে বেদনাদায়ক সময় কাটিয়েছে সেই বুঝবে বেদনাটা। সম্ভবত আপনি এমন কোন খাবার টেস্ট করার মতো সাহসী নন, যা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এটি একটি সাধারণ সমস্যা, যারা শুধু বাংলাদেশ ভ্রমণ করে তাদের জন্য নয় বরং যারা সেখানে বসবাস করে তাদের জন্যও। প্রাপ্তবয়স্ক থেকে শুরু করে ছোট শিশু, এটি আমাদের সবাইকে প্রভাবিত করে।

বাংলাদেশে এই সমস্যা কেন এত ব্যাপক?

যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডার মতো দেশ খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সুবর্ণ মান নির্ধারণ করে, তাহলে বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা এত বড় সমস্যা কেন? এর বিভিন্ন কারণ রয়েছে। সাধারণত, রাস্তার বিক্রেতারা ভুলভাবে খাবার পরিচালনা করে, ভুল তাপমাত্রায় খাবার সংরক্ষণ করে, মাছি এবং ধূলিকণা থেকে সুরক্ষার অভাব এবং স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশের অভাব। বেশিরভাগ রাস্তার বিক্রেতারা ফুটপাথে দোকান স্থাপন করছেন, যেখানে তাদের দিনের বেলা দীর্ঘ কর্মঘণ্টার জন্য যথাযথ হাইজিনের ব্যবস্থা নেই। রাস্তার বিক্রেতাদের হাত থেকে নেওয়া টেস্ট সোয়াবগুলি ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দেখায় যা খাওয়া হলে আপনার পেট খারাপ করতে পারে।

এই সমস্যা সমাধানের জন্য অনেকগুলি পদক্ষেপ রয়েছে যা বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলির মধ্যে একটি হল ইতিবাচক খাদ্য নিরাপত্তা সংস্কৃতি তৈরি করা; এর মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা এবং আচরণের গুরুত্ব সম্পর্কে কর্মীদের মনোভাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা তাদের নিজস্ব নিরাপত্তার পাশাপাশি তাদের আশেপাশের লোকদের অগ্রাধিকার দেয়। খাদ্য নিরাপত্তা সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাবের সাথে, অন্যান্য অনেক ব্যবস্থা সহজেই বাস্তবায়ন করা যায়। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি এবং কর্মক্ষেত্রের স্বাস্থ্যবিধি উভয়ই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার হাত, যন্ত্রপাতি এবং কাজের জিনিসগুলি নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার করুন। নিশ্চিত করুন যে খাবার ঠিকভাবে রান্না করা হয়েছে (পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে) এবং সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা হয়েছে। কাঁচা মাংসে প্রচুর পরিমাণে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থাকে, তাই কাঁচা এবং রান্না করা উপকরণ আলাদা রাখার চেষ্টা করা ভাল, যেমন আলাদা চপিং বোর্ড ব্যবহার করুন।

আমি একটি খাদ্য নিরাপত্তা রেটিং সিস্টেম বিকাশের জন্য ডাইনবিডি কোম্পানির সকল সদস্যদের সাথে দেখা করার এবং কাজ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি যা সামগ্রিক পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাবে, সেইসাথে যারা রাস্তার খাবার খেতে চায় বা যারা খাওয়াতে চায় তাদের জন্য কিছু দৃশ্যমানতা এবং সচেতনতা নিয়ে আসবে।

খাদ্য নিরাপত্তার মান উন্নয়নে আমরা যখন পদক্ষেপ নিচ্ছি, তখন খাদ্যের বিষক্রিয়া বা খাদ্যজনিত অসুস্থতার ফলে কম মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং প্রত্যেকে নিরাপদে যা খুশি খেতে পারবে।

Related Post
উন্নত ডিজাইনের রেস্তোরার রান্নাঘর এবং প্রশিক্ষিত কর্মশক্তি ও সফল রেস্তোরা ব্যবসা

উন্নত ডিজাইনের রেস্তোরার রান্নাঘর এবং প্রশিক্ষিত কর্মশক্তি ও সফল রেস্তোরা ব্যবসা

সাধারণত আমরা লক্ষ্য করেছি, প্রচুর রেস্তোরাঁ স্টার্ট-আপ তাদের ব্যবসা শুরু করছে অভিনব...

Subscribe To Our Newsletter

Subscribe To Our Newsletter

Join our mailing list to receive the latest news and updates from our team.

You have Successfully Subscribed!