বলা হয়ে থাকে প্রিয় খাবার খেলে মানুষের মস্তিষ্কে ডোপামিন রিলিজ বেশি হয়। এই হরমোনকে ভাল লাগার হরমোন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। যেকোন খাবার আমাদের সকল কাজের এবং শারীরিক বৃদ্ধির জন্য শক্তি সরবরাহ করে। কিন্তু যেসব খাবার আমরা খেতে পছন্দ করি সেসব খাবার শক্তির পাশাপাশি আমাদের কাছে উপভোগ্যও বটে।
কিছুদিন আগে খাওইয়া ‘কাচ্চি বিরিয়ানি’ সম্পর্কে আমি আমার অভিজ্ঞতার কথা বলব এখানে। অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলার আগে ‘কাচ্চি বিরিয়ানি’র পিছনের একটু ইতিহাস জেনে আসি।
‘বিরিয়ানি’ শব্দটি ফারসি শব্দ ‘বিরিয়ান’ থেকে এসেছে। এর অর্থ রান্নার আগে ভাঁজা। আমরা যেই বিরিয়ানি খাই তা রান্না করার আগে ঘি’তে ভাঁজা হয়। সাধারণত যুদ্ধের সময় সৈনিকদের জন্য সহজলভ্য এবং কম খরচের খাবার ছিল বিরিয়ানি। মুঘল যুগের পর থেকে বাঙালিদের ঐতিহ্যবাহী খাবার হিসেবে পরিচিতি পায় বিরিয়ানি। সহজভাবে বললে চালকে প্রথমে ঘিয়ে কিংবা বাটারে ভেঁজে আগে থেকে গরম করে রাখা পানিতে রান্না করা হয়।
চালগুলো যেন কোনভাবেই একটা আরেকটার সাথে লেগে না থাকে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা হয়। বিরিয়ানি রান্নার পদ্ধতিতে মাংসের সাথে মেশানোর বিরিয়ানির চালের আকৃতির পরিবর্তন হয়না। সুগন্ধি মসলা বাসমতী চাল এবং মুরগী, খাসী কিংবা অন্য যেকোন মাংস দিয়ে বিরিয়ানি করা যায়। এমনকি একই পদ্ধতিতে সবজির বিরিয়ানি ও যার যার পছন্দ অনুযায়ী করা হয়। বিরিয়ানি আজকাল বেশিরভাগ রেস্তোরাঁয় সবচেয়ে বেশি মুখরোচক খাবার। রেস্তোরাঁগুলো তাদের উদ্ভাবনী চিন্তা দিয়ে খাবারটির স্বাদ, স্বাস্থ্যসম্মত করে তুলে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
কিছুদিন আগে যে আমি ‘কাচ্চি বিরিয়ানি’ খেয়েছিলাম সেই রেস্তোরাঁয় খাবারটি একটি ব্যাতিক্রমভাবে পরিবেশন করা হয়েছিল আমাকে। সেই সাথে তাদের গোপন রেসিপিতে বিভিন্ন মসলা দিয়ে খাবারটির স্বাদকে একটা অনন্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল। বাকি উপাদানগুলোও তারা যথাসময়ে যোগ করেছে বলেই খাবারটির স্বাদ রঙ সবই সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। কাচ্চিটি খাসির মাংসের হওয়া স্বত্তেও মাংসের পরিমান যা ছিল তা আমার মত পেটুকের জন্যও পর্যাপ্ত। অতঃপর যখন সেই মাহেন্দ্র্যক্ষণ এল অর্থাৎ ‘কাচ্চি বিরিয়ানি’ আমার টেবিলে এসে পৌছাল, আমার কাছে মনে হচ্ছিল আমার ভালবাসা আমার কাছে এসে হাতছানি দিচ্ছে। আমার রক্তপ্রবাহে একটা আনন্দের স্রোত বয়ে গেল। কেউ সত্যিই বলেছিল, প্রিয় খাবার সত্যিই ডোপামিনের রিলিজ বাড়িয়ে দেয়। এটা সত্যিই অনেক বেশি উপভোগ্য ছিল যা আমি কখনোই কোন শব্দে বর্ণনা করতে পারব না। কিন্তু আমার এই অভিজ্ঞতাটা বিশেষ করে যখন আমার প্রিয় খাবার সম্পর্কে আমার নিজস্ব অভিমত এখানে শেয়ার করেছি তা আসলেই আমার কাছে অনবদ্য।
এই অনুচ্ছেদে আমি কেবল একটা বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে বলেছি যা এই সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সবচেয়ে আলোচিত একটি খাবার। আমি আশা করব সবাই তার নিজস্ব পছন্দ এবং চাহিদা অনুযায়ীই তার খাবার নির্বাচন করবেন। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর পছন্দের খাবার খেতে থাকবেন।