‘এই কারণেই আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি কারণ আমি সেরা খাবার খেতে পাই!’- যখনই আমি বিভিন্ন অঞ্চলের সুস্বাদু খাবার খাই তখনই এই হয় আমার কথা। অনেক বছর ধরে আমি ভ্রমণ করছি এবং এর মাধ্যমে আমি অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারি। আমার পুরো জীবনটি বিভিন্ন খাবারের একটি জার্নাল এবং নতুন জিনিসের অভিজ্ঞতা হিসেবে আছে। ২০২১ সালের নভেম্বরে, আমি চট্টগ্রামে ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছি। এই জায়গায় আগেও গিয়েছি কিন্তু শহরে ঘোরাঘুরি করার সুযোগ পাইনি। এইবার, আমি শহরটি পরিদর্শন করার এবং ‘মেজবানি গোশত’- এর সুস্বাদ উপভোগ করার সুযোগ নিশ্চিত করেছি, যে নামটি আমি এতদিন ধরে শুনে আসছি।
আমি গরুর মাংস বা খাসির মাংস খুব একটা পছন্দ করি না। কিন্তু চট্টগ্রামে নামার আগে মেজবানি গোশত খাব তা মনস্থির করলাম। এটি আমার দুপুরের খাবারের জন্য ছিল কারণ এটি ভারী খাবারের একটি অংশ। আমার খালা যিনি চট্টগ্রামের বাসিন্দা, তিনি ‘মেজ্জান’ নামের এই মজাদার খাবারটি তৈরি করেছিলেন।স্থানীয় লোকেদের স্থানীয় ভাষায় এটিকে ‘মেজ্জান’ বলে। মূলত, সারা বিশ্ব এখন খাবারটিকে ‘মেজ্জান’ নামেই চেনে।
‘মেজবান’ শব্দের অর্থ ‘মেহমান’ এবং ‘মেজবানি’ অর্থ ‘মেহমান বা অতিথিদের জন্য ভোজের আয়োজন করা।’ এটি একটি ঐতিহ্যবাহী আ লিক ভোজ যেখানে লোকজনকে সাদা ভাত এবং মেজবানি গোশতের সাথে খাবার উপভোগ করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়।
এছাড়াও অনেক খাবার রয়েছে, যেমন- মুগ ডাল, সবজির তরকারি এবং ভাজা কলিজা। এই ঐতিহ্যবাহী আ লিক ভোজের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হল এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। যে কেউ এসে খাবার উপভোগ করতে পারবেন। সব মানুষ এই ‘মেজ্জান’-এর জন্য আমন্ত্রিত। গোশতের প্রথম কামড়টি আমার মুখে প্রচুর স্বাদের সাথে গলে গিয়েছিল এবং এর ঝোল ছিল অবিশ্বাস্য মজাদার। ভাত আর মুগ ডাল দিয়ে খেয়েছি। এই মেজবানি গোশতের মশলাদার স্বাদ আমাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে। যেহেতু এটি একটি উৎসবের মত এবং একটি ঐতিহ্যবাহী আয়োজন তাই এই বিশেষ আয়জনের কিছু নিয়ম রয়েছে। এটি বেশিরভাগই চট্টগ্রামের শহরাঞ্চলে আয়োজিত হয় এবং এটি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এই ভোজের আরেকটি নাম আছে যা ‘জেয়াফাদ’ নামে পরিচিত।
আগে এটি শুধুমাত্র চট্টগ্রামের জন্য বিখ্যাত ছিল কিন্তু এখন এটি প্রতিটি অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। ঠিক যেমন নাম, রান্নার প্রক্রিয়া, এই খাবারে ব্যবহৃত মশলা, স্বাদ সবকিছুই এই খাবারটির অনন্য। এটি চট্টগ্রামের একটি সুস্বাদু খাবার। আমার শেষ চট্টগ্রাম সফরে মেজ্জানের সুস্বাদুতা আমাকে বিস্মিত করেছিল। আমি এখন ‘মেজ্জান’-কে না বলব না। এটি আমার জীবনের সেরা ঐতিহ্যবাহী আঞ্চলিক খাবারগুলোর মধ্যে একটি। ‘মেজ্জান’ এর সুস্বাদুতা রাজত্ব করতে থাকবে পৃথিবীর প্রতিটি কোণে! আপনি যখনই চট্টগ্রামে যাবেন আমি বলব এই খাবারটি একবার উপভোগ করে দেখবেন। কারণ ‘মেজ্জান’ আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে!