একজন ভোজনরসিক হিসেবে নতুন পদের খাবারের অভিজ্ঞতা নেওয়ার সুযোগ আমি কখনো হাতছাড়া করি না। অতঃপর খুবই সম্প্রতি আমার বাবা আমাকে এবং আমার মাকে সন্ধ্যার নাস্তা করানোর জন্য একটি রেস্তোরাঁয় নিয়ে যাবেন বলে প্রস্তাব করেন। তিনি আমাদের এক পারিবারিক বন্ধুকেও তার পরিবারসহ নিমন্ত্রণ জানান।
আমরা সকলে গত ১ ডিসেম্বর মোহাম্মদপুরে একত্রিত হই এবং কি খাওয়া যেতে পারে সেটা নিয়ে আলোচনা করতে থাকি। তার দুদিন আগে আমি ও আমার মা একটি প্রচলিত খাবার উদ্ঘাটন করি, যেটা আমরা আগে কখনও খাই নি। সেটা হলো ‘ছিটা রুটি ও হাঁস ভুনা’। তাই এটা আমার মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিলো। এ সুযোগে আমি ছিটা রুটি আর হাঁস ভুনা খাওয়ার প্রস্তাবনা দেই এবং সবাই একমত পোষন করেন। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা ছিটা রুটি আর হাঁস ভুনাই খাবো।
আমরা ‘ফ্লেভার-এ-ফায়ার’ রেস্তরাঁয় ঢুকে গেলাম সবাই মিলে। রেস্তোরাঁটা ছোট তবে ভীষন সুন্দর করে সাজানো যা পরিবার, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার জন্য বেশ ভালো। আমরা ৭ টি প্যাকেজ অর্ডার করি, যার ১ টি প্যাকেজে থাকে ৪ টি ছিটা রুটি এবং ৩ পিসের এক বাটি হাঁস ভুনা। তারপর আমরা সবাই মিলে গল্প, আড্ডা আর ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পরলাম।
প্রায় ২০-২৫ মিনিট পর খাবারগুলো পরিবেশনা করা হয়। যেহেতু ছিটা রুটি একটি প্রচলিত খাবার তারা এটাকে মাটির বাসনে পরিবেশন করেছিলেন। বিষয়টা আমাদের কাছে খুব ভালো লাগে। তাদের পরিবেশনটা আমরা বেশ উপভোগ করছিলাম। হাঁস ভুনা দেখে আমার মুখে পানি চলে আসছিলো কারন, দেখতে খুবই রসালো আর ঝাঝালো মনে হচ্ছিলো হাঁস ভুনাটা। খাবারের কিছু ছবি তোলার জন্য আমদের খেতে দেরি হচ্ছিলো আর ততক্ষণে আমি খাওয়া শুরু করার জন্য অধৈর্য্য হয়ে যাচ্ছিলাম। যেহেতু আমি আগে কখনো এটা খাইনি তাই এমনটা মনে হচ্ছিলো। আমি প্রচুর উৎসাহী ছিলাম। অবশেষে, মুখে দেওয়ার সাথে সাথে ছিটা রুটি আর হাঁসের ঝোল একেবারে গলে গেলো মনে হচ্ছিলো। আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি এখনো ওই স্বাদ অনুভব করতে পারছি। খাবারটা এতো মজা ছিলো যে আমি একবারে অনেকগুলো খেয়ে ফেললাম । হাঁস ভুনাটা প্রচুর ঝাল ছিলো। সাধারণত হাঁস রান্নায় ঝালটা একটু বেশিই হয়। এটা এতো বেশি মজাদার ছিলো যে ঝালে সবার নাক দিয়ে পানি পড়ছিলো তবুও সবাই খাচ্ছিলাম। আমাদের প্রয়োজন মতো তারা বাড়তি ঝোলও দিয়েছিলো আমাদেরকে। আমি যতটুকু ভেবেছিলাম তার থেকেও অনেক বেশি মজা পেয়েছি এই ছিটা রুটি আর হাঁস ভুনা খেয়ে। আমি এতটাই সন্তুষ্ট যে সুযোগ পেলে আবার এই খাবারটা খেতে যাবো।
যদিও এটা আমার প্রথমবার খাওয়া একটা অভিজ্ঞতা তবু আমি বলবো এটা আমার খাওয়া অন্যতম সেরা একটি খাবার। আমি অবশ্যই আবারও এটা খাবো এবং আমার বন্ধুদেরকেও এটা একবার হলেও খেয়ে দেখতে বলবো।