Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the all-in-one-wp-security-and-firewall domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /var/www/wp-includes/functions.php on line 6114
চেইন রেস্তোরার ইতিকথা | The Diniverse

চেইন রেস্তোরার ইতিকথা

by | জানু. 8, 2023 | Blog

Traditional Khichuri hobe

A&W is one of the oldest restaurant businesses

Restaurant- এর বাংলা প্রতিশব্দ “রেস্তোরাঁ” বলতে এমন জায়গাকে বোঝায় যেখানে অর্থের বিনিময়ে অতিথিকে খাদ্য ও পানীয় পরিবেশন করা হয়। “রেস্তরাঁ” শব্দটি এসেছে ফরাসী “রেস্তরাঁর” থেকে। যদিও এখন বাংলায় রেস্তোরাঁ থেকে ইংরেজি রেস্টুরেন্ট শব্দটিই সুপরিচিত। 

অষ্টাদশ শতাব্দীতে ফ্রান্সে আধুনিক রেস্তোরাঁর ভিত্তি গড়ে উঠলেও গঠনগত দিক থেকে প্রাচীনকাল থেকেই অতিথিশালা এবং সরাইখানা নামে রেস্তোরাঁ ব্যবস্থা চালু ছিল। সেগুলো মূলত দূরদূরান্ত থেকে আসা ভ্রমণকারী ও ব্যবসায়ীদের জন্য ছিল, স্থানীয় মানুষ এসব সেবা গ্রহণ করত না। অথচ আমরা এখন দেখতে পাই যে স্থানীয় এবং বহিরাগত মানুষ উভয়ই সমানভাবে রেস্তোরাঁর সেবা গ্রহণ করছে। সেইসাথে আমরা দেখি যে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন শ্রেণি ও বিভিন্ন ধারার উপর ভিত্তি করে অনেক ধরণের রেস্তোরাঁ গড়ে উঠেছে। সুতরাং এটি বলাই বাহুল্য যে আমরা আজকের দিনে রেস্তোরাঁকে যেভাবে দেখি তা প্রাচীনকাল থেকে অনেক পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে এই অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে এবং এর সেবার ধারণাটি এখনও বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে।

সময়ের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সাথে সাথে রেস্তোরাঁ ব্যবসার পরিধি বাড়তে থাকে। স্থানীয় মানুষরা সেবা নিতে শুরু করায় রেস্তোরাঁর পরিসরও বাড়াতে হয়। কিন্তু তারপরও সীমাবদ্ধতা থেকে যায়। একটি রেস্তোরাঁ তখন শুধুমাত্র একটি শহরে এক জায়গাতেই সেবা দিতে সক্ষম ছিল। চেইন রেস্তোরাঁ পদ্ধতি এই সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করার উপায় বাতলে দেয়। একটি কোম্পানি যখন এক বা একাধিক শাখা পরিচালনা করে তখন সেই রেস্তোরাঁর ব্যবসার ধরণটিকে চেইন রেস্তোরাঁ বলা হয়। শুরুর দিকে সকল চেইন রেস্তোরাঁ অন্যান্য শাখার সম্পূর্ণ মালিকানা নিজের কাছে রাখত। কিন্তু পর্যায়ক্রমে ফ্রাঞ্চাইজি পদ্ধতি চালু হয় যেখানে কোন ব্যবসায়ী রেস্তোরাঁর নামে নিজে ব্যবসা করতে পারবে। যখন কোন রেস্তোরাঁ ব্যবসা বাড়াতে চাচ্ছে কিন্তু তাদের পর্যাপ্ত মূলধন নেই, আবার কোন ব্যবসায়ী চলতি ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে; এই দুই পক্ষের জন্যই ফ্রাঞ্চাইজি পদ্ধতি সুফল বয়ে আনে। কিন্তু এই পদ্ধতিতে শাখা রেস্তোরাঁর উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ না থাকায় অনেক সময় শাখা রেস্তোরাঁর সেবার মান পড়ে যায়। ফলশ্রুতিতে মূল রেস্তোরাঁর সামগ্রিক ঐতিহ্যতেও এর খারাপ প্রভাব পড়ার একটা সম্ভাবনা থেকে যায়। এজন্য চেইন রেস্তোরাঁগুলো এখন বেশিরভাগ সময়েই শাখা করার চুক্তিতে খাবারের মান বজায় রাখার জন্য নুন্যতম ক্ষমতা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করে। এর ফলে সব শাখায় একই ধরণের সেবার মান বজায় রাখা সম্ভব হয়।

ঐতিহাসিকভাবে, আমেরিকার A&W চেইন রেস্তোরাঁ ব্যবসা শুরু করে ১৯১৯ সালে। এখন সবাই A&W কে রুট বিয়ার কোম্পানি হিসেবে চিনলেও এই ব্যবসা শুরু হয়েছে এদের হাত ধরে। এমনকি সত্তরের দশকে এদের সংখ্যা এখনকার জায়ান্ট ম্যাকডোনাল্ডের চেয়েও বেশি ছিল। তবে সত্যিকার অর্থে চেইন রেস্তোরাঁ ব্যবসায় বিপ্লব বয়ে নিয়ে আসে ক্যান্সাসের রেস্তোরাঁ হোয়াইট ক্যাসেল, ১৯২১ সালে। তখনকার দিনে বার্গার নিম্নমানের খাবার হিসেবে বিবেচিত হতো এবং শুধুমাত্র মেলায় এবং রাস্তার পাশে ফুডকার্টগুলোতে বিক্রি করা হতো। সাধারণ মানুষ বার্গার বলতে বুঝতো কসাইখানার উচ্ছিষ্ট মাংস দিয়ে বানানো নিচুশ্রেণির লোকের খাবার। আদতে বার্গার ছিল একদম তাই। সেই বার্গারকে সমাজের সবশ্রেনির কাছে পৌছে দেবার সর্বপ্রথম কাজ করেছে হোয়াইট ক্যাসেল আর রেস্তোরাঁ জগতে শুরু করেছে ‘ফাস্ট ফুড’ নামে নতুন এক ধারা।

হোয়াইট ক্যাসেলই সর্বপ্রথম ‘খোলা রান্নাঘর’ পদ্ধতির প্রবর্তন করে যেখানে খাবারের ক্রেতা চাইলেই কিভাবে তার সুস্বাদু বার্গারটি বানানো হচ্ছে তা সরাসরি দেখতে পারেন। টাইম ম্যাগাজিন হোয়াইট ক্যাসেলকে “সর্বকালের সবচেয়ে প্রভাবশালী বার্গার” হিসাবে উল্লেখিত করেছে।

চল্লিশ এবং পঞ্চাশের দশকেই চেইন রেস্তোরাঁ ব্যবসা দ্রুত বাড়তে শুরু করে এবং এখনকার নামকরা বড় বড় চেইন রেস্তোরাঁগুলোর জন্ম শুরু হয় তখন। চল্লিশের দশকের একদম শুরুতেই ১৯৪০ সালে ইল্লিনয়েসের ছোট শহরে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে ‘ডেইরি কুইন’(DQ)। ডেইরি কুইনই সর্বপ্রথম সফট আইস্ক্রিমের ধারণা নিয়ে কাজ করে। প্রথম দিনেই মাত্র ২ ঘন্টায় ১৬০০ আইসক্রিম বিক্রি করেন তারা।


সত্তরের দশকে প্রতিষ্ঠিত হওয়া জায়ান্ট স্টারবাকসের অনেক আগে থেকেই কফি এবং ডোনাটের জগতে রাজত্ব করছিল ম্যাসেচুসেটসের ডানকিন’ ডোনাটস। প্রথমে ওপেন কেটল এবং পরবর্তীতে কেটল ডোনাট নামের রেস্তোরাঁটি ১৯৪৮ সালে ডানকিন’ ডোনাট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।


১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জ্যাক ইন দ্যা বক্স। এরাই সর্বপ্রথম রেস্তোরাঁতে বসে খাওয়ার চেয়ে গাড়িতে বসা অবস্থাতেই অর্ডার করে খাবার নিয়ে চলে যাওয়া তথা ড্রাইভ থ্রু রেস্তোরাঁর ধারণা নিয়ে কাজ করে। আমেরিকার ব্যস্ত মানুষরা অবশ্যই জ্যাক ইন দ্যা বক্সের কাছে ঋণী থাকবে।

১৯৫২ সালে কর্ণেল হার্ল্যান্ড স্যান্ডার্সের হাতে শুরু হয় ফ্রাইড চিকেন জায়ান্ট কেন্টার্কি ফ্রাইড চিকেন, সংক্ষেপে কেএফসি। রান্নায় পারদর্শী জীবনের অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে আসা স্যান্ডার্সকে গভর্নর ‘কেন্টার্কির কর্নেল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। স্যান্ডার্স এই সম্মানকে এতটাই মর্যাদার চোখে দেখতেন যে নিজের নামে তিনি কর্ণেল ব্যবহার করতেন। 

অনেকে ভাবছেন সর্বকালের অন্যতম জনপ্রিয় ম্যাকডোনাল্ড’স এর নাম আসছে না কেন? আসলে অনেকে একে প্রথম চেইন রেস্তোরাঁ ভাবেন। কিন্তু ম্যাকডোনাল্ড’স এর যাত্রা শুরু হয় ১৯৫৫ সালে। তখন এর নাম ছিল ম্যাকডোনাল্ড’স বার-বি-কিউ। পরবর্তীতে বার্গারের দিকে বেশি নজর দিয়ে এর নাম এখনকার নামে পরিবর্তন করা হয়। 

সবাই ম্যাকডোনাল্ড’স কে সবথেকে জনপ্রিয় ভাবলেও জনপ্রিয়তার বিচারে প্রথম স্থান পিট’স সুপার সাবমেরিনসের। চিনতে পারছেন না তাই তো? সাবওয়ে নামে এই রেস্তোরাঁটিকে কিন্তু আপনি ঠিকই চিনতে পারবেন। ১৯৬৫ সালে ফ্রেড ডেলুকার ধার করা একহাজার ডলারে শুরু হওয়া কানক্টিকাটের এটি এন্টার্কটিকা বাদে বিশ্বের ৪০ হাজারেরও বেশি জায়গায় দেখতে পারবেন। সাবওয়ে ২০১০ সালে ম্যাকডোনাল্ড’স কে সরিয়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় চেইন রেস্তোরাঁতে পরিণত হয়। এদের সাবওয়ে স্যান্ডউইচ প্রতি মিনিটে গড়ে ৫৩০০ জন খেয়ে থাকেন।

১৯৫৮ সালে যাত্রা শুরু করে আমেরিকার প্রথম চেইন পিৎজা রেস্তোরাঁ পিৎজা হাট। ক্যান্সাসে শুরু হওয়া, মাত্র ২৫ জনের বসার ব্যবস্থা ছিল এবং এদের জায়গাটি ছোট হওয়াতে মাত্র ৯ টি অক্ষর লেখার মত জায়গা থাকায় এরা পিৎজা হাটের মত সহজ নাম বেছে নেয়। 

১৯৬০ সালে মিশিগানে ডোমি-নিকস নামে আরেকটি চেইন পিৎজা রেস্তোরাঁর সূচনা হয়। যা ১৯৬৫ সালে এখনকার নাম ডোমিনোজ পিৎজা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তাপরোধী এবং একটির উপর আরেকটি রাখার মত শক্ত পিৎজা বক্স ব্যবহার ডোমিনোজকে সাফল্যের পথে নিয়ে যায়।

এভাবেই অনেক উত্থান পতন এবং নতুন নতুন চিন্তার উপর ভিত্তি করে আলাদা আলাদা ধারার বিভিন্ন চেইন রেস্তোরাঁ সৃষ্টি হচ্ছে অথবা নিজেদের চিরাচরিত ধারা পাল্টে অনেক রেস্টুরেন্টই অন্য কোন নির্দিষ্ট খাবার বা পানীয়ের উপর দৃষ্টি রেখে নিজেদেরকে ভেঙ্গে আবার গড়ে তুলছে। তবে তারচেয়েও বড় কথা হচ্ছে তারা সবাই আপনার উদরপূর্তির দিকে লক্ষ্য রেখে নিত্যনতুন স্বাদের খাবার সাজাচ্ছে।

Related Post
ফিফার জ্বর

ফিফার জ্বর

‘ফুটবল শুধু একটি খেলা নয়, এটি একটি আবেগ’- কথাটি প্রতিটি বিশ্বকাপেই সত্যি হয়। ‘ফুটবল’...

Subscribe To Our Newsletter

Subscribe To Our Newsletter

Join our mailing list to receive the latest news and updates from our team.

You have Successfully Subscribed!