আমরা সবাই কালারফুল খাবার খেতে পছন্দ করি, তাই না? তেমনই এক কালারফুল খাবার হলো সামুদ্রিক স্কুয়ার্ট। সাধারণত হলুদাভ বা সবুজাভ বাদামি বর্ণের হয়ে থাকলেও এদের রয়েছে আরও অনেক রং। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: সাদা, লাল, নীল, কমলা ও গোলাপি। রং এর মতোই বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায় এদের প্রজাতি এবং নামের ক্ষেত্রে। নানা প্রজাতি নানা নামে পরিচিত যেমন: এসসিডিয়ান্স, টুনিকেটস, সামুদ্রিক আনারস, সামুদ্রিক আঙ্গুর। স্কুয়ার্ট এর গুচ্ছকে দেখতে অনেকটা আঙুরের গুচ্ছের ন্যায় মনে হয় তাই একে সামুদ্রিক আঙ্গুর বলা বলা হয়ে থাকে। সামুদ্রিক স্কুয়ার্ট দেখতে গোলাকার এবং এদের শরীর লোমশ।
সামুদ্রিক স্কুয়ার্ট লম্বায় সাধারণত ০.৫ থেকে ১ সে.মি. হয়ে থাকে তবে কিছু কিছু স্কুয়ার্ট এর দৈর্ঘ্য ২ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। এদের ওজন হয়ে থাকে ১০০ থেকে ২০০ গ্রাম। সারা পৃথিবীজুড়ে গভীর সমুদ্রে সামুদ্রিক স্কুয়ার্ট পাওয়া যায়। উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর পাথর, ঝিনুক ইত্যাদির পিঠেও এদের দেখা যায়।
পৃথিবীর অনেক দেশেই সামুদ্রিক স্কুয়ার্ট খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে এশিয়ান দেশগুলোয় অনেক প্রজাতিকে অনেকভাবে রান্না করা হয়ে থাকে।
সম্ভবত কোরিয়াতেই এর প্রচলন সবচেয়ে বেশি। কোরিয়ায় সবচেয়ে বিখ্যাত সামুদ্রিক স্কুয়ার্ট এর প্রজাতি হলো মেয়োনজে। কোরিয়ার দক্ষিণের গিয়ংসাং প্রদেশের তংগেয়ং এ এর চাষ সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। মোট মেয়োনজের ৭০ শতাংশই আসে এই জায়গা থেকে। এর শরীরের রাবারের মতো অংশটি সম্পূর্ণভাবে আলাদা করে ফেলা হয় এবং কমলা কালারের রসালো ছোট ছোট টুকরা হিসেবে পরিবেশন করা হয়। সাধারণত এদের কাঁচাই খাওয়া হয়ে থাকে। মুখে দিলে মেয়োনজে পিচ্ছিল এবং নরম মনে হয়। মেয়োনজের স্বাদ অনেক শক্তিশালী এবং তাতে কিছুটা তিক্ততা রয়েছে। চিলি পেস্ট এবং তিলের তেলের সস দিয়ে এর বিচিত্র স্বাদকে অন্য মাত্রা দিয়ে থাকেন অনেকে। আগুজিম হচ্ছে সামুদ্রিক স্কুয়ার্ট দিয়ে তৈরি এক ধরনের খাবার যা কোরিয়ার পাশাপাশি জাপানেও পাওয়া যায়। অনেকের মতে এর স্বাদ খুবই অদ্ভুত, কিছুটা রাবারের মতো।
এই দুই এশিয়ান দেশ ছাড়াও সামুদ্রিক স্কুয়ার্ট পাওয়া যায় ফ্রেঞ্চ, ইতালিয়ান, গ্রিক এবং চিলিয়ান রন্ধনপ্রণালীর তালিকায়।