বিলাসবহুল একটি খাবার ক্যাভিয়ার, যাকে “ধনীদের খাবার” নামে আখ্যায়িত করা হয়। বিরল স্টার্জন মাছের ডিমের এই খাবারটি দেখতে বেশ আকর্ষণীয় এবং সিল্কি টেক্সচারের হয়ে থাকে। এর আকার কিছুটা মুক্তার মত। বিরল বেগুলা ক্যাভিয়ার সবচেয়ে ব্যয়বহুল এবং বিশাল আকৃতির হয়। বেশ কয়েক বছর আগে, রাশিয়ান জেলেদের প্রতিদিনের খাবারের অংশ ছিলো স্টার্জন মাছের ডিম। কিন্ত এখন এটি সবচেয়ে ব্যয়বহুল খাদ্যে পরিণত হয়েছে। এর প্রধান কারণ প্রজনন বয়স। একটি স্ত্রী স্টার্জন সাধারণত ১০-১৫ বছর বয়স থেকে ডিম উৎপাদন শুরু করে। আগে এই ডিম সংগ্রহের জন্য, স্ত্রী মাছটিকে মেরে ফেলতে হত। তবে বর্তমানে প্রযুক্তির সহয়তায়, স্ত্রী মাছটি মেরে ফেলার পরিবর্তে, এটি থেকে ডিম বের করে আনা হয়।
এই পুষ্টিকর খাবারে প্রোটিন, আয়রন, ভিটামিন, এমিনো এসিড সহ আরো অনেক পুষ্টি উপাদান থাকে। ক্যাভিয়ার ত্বকের জন্য বেশ উপকারী এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত উপকারীতাও রয়েছে। এটি রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমিয়ে স্টোকের সম্ভাবনা কমায়। এতে উপস্থিত সেলেনিয়াম কোষের ক্ষতি রোধ করে। ক্যাভিয়ার লোহিত রক্ত কণিকা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে। আমাদের মতিষ্ক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও এর গুরুত্ব অপরিসীম।
আমরা জেনেছি যে বেলুগা ক্যাভিয়ার সর্বাধিক ব্যয়বহুল। আমরা এই তালিকায় আরো দুইটি ব্যয়বহুল ক্যাভিয়ার যুক্ত করতে পারি। সেগুলো হল সেভ্রুগা এবং ওসেট্রা। আগে রাশিয়া ও ইরাক সবথেকে ভালো মানের ক্যাভিয়ার রপ্তানি করত, তবে বর্তমানে এই চিত্রটি ভিন্ন। এখন ক্যাভিয়ারের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ চীন।
ক্যাভিয়ার কোন খাবারের সাথে না খেয়ে সরাসরি খাওয়ার প্রচলনই অধিক। তবে কিছুক্ষেত্রে মিষ্টি জাতীয় খাবারের সাথেও পরিবেশন করা হয়। এমনকি অন্যান্য খাবারের সাথে মিশিয়েও পরিবেশন করা যায়। পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করলে এর অসাধারণ স্বাদ বোঝা যায়।
বেশ ব্যয়বহুল হওয়ায় বর্তমানে স্টার্জন মাছের ডিমের পরিবর্তে মানুষ অন্যান্য মাছের ডিম ব্যবহার করছে। এগুলো খেতে সুস্বাদু হলেও এর স্বাদ স্টার্জন ক্যাভিয়ারের সাথে কি আর তুলনা করা যায়! তবে মূল কথা হলো, এর আকর্ষণীয় গঠন আর অদ্ভুত স্বাদের কারনে ক্যাভিয়ার অল্প সময়েই সকলের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।