ইংলিশ ব্রেকফাস্ট

by | জানু. 19, 2023 | Blog

Traditional Khichuri hobe

A healthy breakfast

‘ইংলিশ ব্রেকফাস্ট’ সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সুস্বাদু নাস্তা আইটেমগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে পরিচিত। এটির জনপ্রিয়তা শুধুমাত্র ব্রিটেনেই নয় বরং ছড়িয়েছে বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশে। ইংল্যান্ডের এই বিখ্যাত খাবারটি এত জনপ্রিয় হবার রহস্য হল এর প্লেটভর্তি সমৃদ্ধ এবং হালকা উভয় ধরনের খাবারের বিরল সংমিশ্রণ। সম্পূর্ণ ইংলিশ ব্রেকফাস্টকে ‘ফ্রাই আপ’ও বলা হয়ে থাকে। এই ফ্রাই আপ এ সাধারণত যেসব খাবার আইটেম থাকে তা হলো, সসেজ, বেকন, ব্রেড, ভাজা ডিম, টমেটো, মাশরুম, কালো বা সাদা পুডিং। আর পানীয় হিসেবে রয়েছে গরম চা অথবা ব্ল্যাক কফি। বিগত কয়েক শতাব্দী ধরে এই ইংলিশ ব্রেকফাস্ট স্বাদে, সৌন্দর্য্যে ও স্বাস্থ্যকর উপাদানে ভরপুর হবার জন্য বহু মানুষের মনে বিশেষস্থান করে নিয়েছে। 

১৩শ শতাব্দীতে জেন্ট্রিরা সর্বপ্রথম ইংলিশ ব্রেকফাস্টের প্রথা আরম্ভ করেন। সেই সময়ে সাধারণত দিনের প্রথমভাগের খাবারটিকে অনেক প্রাধান্য দেওয়া হত। কারণ, যারা সারাদিনে কঠোর পরিশ্রম করতো তাদের প্রয়োজনীয় শারীরিক পুষ্টি চাহিদার সরবরাহ এর মাধ্যমে করা হত। যদিও ইংলিশ ব্রেকফাস্ট সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষদের জন্য প্রচলিত একটি খাবার ব্যবস্থা, সময়ের সাথে সাথে এটি সর্বস্তরের মানুষের একটি প্রিয় খাবারে রূপ নেয়। বিবর্তনের ছোঁয়া এই রানীর দেশের খাবারে এতটুকু পরিবর্তন আনতে পারেনি। সকালের নাস্তাতে তাই ইংরেজরা তাদের এই ঐতিহ্যবাহী ইংলিশ ব্রেকফাস্ট দিয়েই দিন শুরু করে। 

ইংলিশ ব্রেকফাস্ট খুব সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যসম্মত একটি প্রকৃয়া। ইংলিশ ব্রেকফাস্টে প্রচলিত চায়ে কোন প্রকার চিনি ব্যবহার করা হয় না। তাই, যারা স্বাস্থ্য সচেতনতায় চিনি এড়িয়ে চলেন তাদের জন্য এটি এক কথায় অসাধারণ ব্যবস্থা। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এই চা খুবই উপকারী। আর চায়ে থাকা উপকারী এন্টিঅক্সিডেন্টস এর ওপর কোন প্রভাব না থাকায় আলাদা করে এই চায়ের রয়েছে বিশেষ জয়গান। 

ঐতিহ্যবাহী এই ইংলিশ ব্রেকফাস্টের অপরিহার্য উপাদান হলো মাংস। তাই মাংস প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে মেনে চলা হয় নানা সতর্কতা। ট্রেনিংপ্রাপ্ত শেফরা সঠিক নিয়মে মাংস কাটা থেকে শুরু করে কোন উপায়ে এর গুণগত মান বজায় রেখে ইংলিশ ব্রেকফাস্টের যথাযথ ঐতিহ্য ধরে রাখা যায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকেন। কিছু ক্ষেত্রে অনেকে তাদের পছন্দ অনুযায়ী প্রস্তুত করা মাংস খেতে পছন্দ করেন যেমন, কেই ফ্রাই খান, কেউ খান গ্রিল। সেগুলোর আবার রয়েছে আলাদা কুকিং প্রোসেস। ইংলিশ ব্রেকফাস্ট তৈরীতে বিশেষ নজর দেওয়া হয় এই বিষয়েও। নিরামিষভোজীরা মাংসকে এড়িয়ে বিভিন্ন রকমের বিন যোগ করে নিতে পারেন এই মেনুতে যা আমিষের ঘাটতি পূরণ করে। ডিমের ক্ষেত্রেও একই কথা। সঠিক নিয়মে ডিম ভেজে দেওয়াটাও এই সংস্কৃতির একটা অংশ। 

সাধারণত, যেখানেই ইংলিশ ব্রেকফাস্ট পাওয়া যায় সেখানেই এটি একই রকম হয়ে থাকে। তবে, কিছু কিছু রেস্তোরাঁ ভোক্তাদের পছন্দ অনুযায়ী যোগ করে থাকেন বাড়তি কিছু পদ। যারা ইংলিশ ব্রেকফাস্টপ্রেমী তারা এই খাবারটিতে খুব বেশি পরিবর্তন পছন্দ করেন না। তাই হুবহু স্বাদ বজায় রাখার চেষ্টা থেকেই যায় সব জায়গায়। নতুন এক্সপেরিমেন্টের পরিবর্তে সঠিক স্বদটি ধরে রাখতে পারাটাই শেফদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ, আর তাইতো এর চাহিদা ও সুনাম এত বেশি।     

সকালের নাস্তার ওপর আমাদের সারাদিনের কর্মক্ষমতা নির্ভর করে। স্বাস্থ্যবিষয়ক যে কোন উপদেশে আমরা সকালের নাস্তা রাজকীয় হওয়া উচিত বলেই জেনে থাকি। সে ক্ষেত্রে ইংলিশ ব্রেকফাস্টের কোন তুলনা হয় না। এ যেন স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই প্রস্তুত করা হয়। ইংলিশ ব্রেকফাস্ট মানেই স্বাদ, স্বাস্থ্য ও লোভনীয়তার সংমিশ্রণ। বিশ্বের প্রতিটি খাবারপ্রেমীদের কাছে এর গ্রহণযোগ্যতা ব্যাপক হওয়ায় প্রায় অনেক দেশের বড় রেস্তোরাঁ বা ক্যাফেতে মিলে যায় এই খাবারের সন্ধান। তবু, রানীর দেশে বসে রাজকীয় খাবার উপভোগ করার সাথে তুলনা হবে না আর কিছুর। 

Related Post
ফিফার জ্বর

ফিফার জ্বর

‘ফুটবল শুধু একটি খেলা নয়, এটি একটি আবেগ’- কথাটি প্রতিটি বিশ্বকাপেই সত্যি হয়। ‘ফুটবল’...

Subscribe To Our Newsletter

Subscribe To Our Newsletter

Join our mailing list to receive the latest news and updates from our team.

You have Successfully Subscribed!